কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের মাগন আলী তালুকদার বাড়ির মেয়ে ইয়াছমিন। অভাবের সংসারে পিতার মৃত্যুর পর খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় ইয়াছমিনের। একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেবার পরেই তার স্বামী তাকে ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। নিজের অবুঝ সন্তানকে নিয়ে অসুস্থ্ মায়ের সংসারে এসে ওঠেন ইয়াছমিন। আয়ের কোন পথ না থাকায় ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন তিনি। সারাদিন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ভিক্ষা করে যা পেতেন তা দিয়েই অসুস্থ্য মায়ের চিকিৎসা, নিজের ভরণপোষণ এবং সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতেন তিনি। এভাবে একদিন ভিক্ষারত অবস্থায় তার দেখা হয় উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কর্ণফুলী, চট্টগ্রামে কর্মরত কারিগরি প্রশিক্ষক নুর আকতারের সাথে। কারিগরি প্রশিক্ষক নুর আকতার প্রথমেই তাকে সমাজসেবা কার্যালয়ের বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতার আওতায় আনেন। পরবর্তীতে তিনি ইয়াছমিনকে সমাজসেবা কার্যালয় পরিচালিত ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসেন। উক্ত কর্মসূচির আওতায় ইয়াছমিনকে একটি দুধেল গাভী ক্রয় করে দেওয়া হয়। সমাজসেবা কার্যালয় থেকে তাকে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণও প্রদান করা হয়। ঋণের টাকা এবং গাভী পাওয়ার পরে ইয়াছমিন ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেন। সমাজসেবা কার্যালয়ের নিবিড় তত্ত্বাবধানে বর্তমানে গাভীর দুধ বিক্রি করে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে ইয়াছমিন তার ছেলের লেখাপড়া করানোর পাশাপাশি সংসারের ব্যয়ভার বহন করছেন। সমাজসেবা কার্যালয়ের ছোট্ট একটা উদ্যোগ বদলে দিয়েছে ভিক্ষুক ইয়াছমিনের জীবন। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে এখন তিনি স্বাবলম্বী। তাকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি সমাজসেবা কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ সরকারের এমন মহতী উদ্যোগের জন্য তিনি সরকারের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস